Birds of Bangladesh
বাংলাদেশে পাখি (Birds of Bangladesh) দেখা আপনি যা কল্পনা করতে পারেন তার বাইরে। এখানে বসবাসকারী, ক্ষণস্থায়ী এবং মাঝে মাঝে দেখা যাওয়া পাখির সম্পদ আমাদের অঞ্চলটিকে সারা বিশ্বের পক্ষীবিদদের জন্য স্বর্গে পরিণত করেছে।
আর বুলবুল, জে-বার্ড, রবিন, সাধারণ খেলার পাখি, কোকিল, বাজপাখি, হাঁস, পেঁচা এবং আরও অনেক ধরণের পাখি হল বাংলাদেশের প্রকৃতপক্ষে বসবাসকারী পাখি।
আপনি চাইলে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঘুরে আসতে পারেনঃযাচ্ছেতাই
বাংলাদেশের পাখির (Birds of Bangladesh) তালিকায় মোট ৬৫০টি পাখিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সমস্ত পাখিদের মধ্যে গত দুই শতকে অনেক পাখি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে তাদেরকে বাদ দিয়ে এখন বাংলাদেশে মোট ৬২০টি পাখি রয়েছে।
এই ৬৫০টি পাখির মধ্যে প্রায় ২৯ ধরণের পাখির বাংলাদেশে এখন না পাওয়া গেলেও সারা বিশ্বে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ১ ধরণের পাখি সারা বিশ্ব থেকে বিলুপ্ত হয়েগিয়েছে সেই পাখিটির নাম হলঃ গলাপি শির হাঁস।
এই ৬২০টি প্রজাতির মধ্যে ১৪৩টি প্রজাতির পাখি বাংলাদেশে ‘অনিয়মিত’ আখ্যায়িত হয়েছে, কারণ কালেভদ্রে এদের দেখা যায়। বাকি ৪৭৭ প্রজাতির পাখি বাংলাদেশে (Birds of Bangladesh) নিয়মিত দেখা যায়। এই ৪৭৭ প্রজাতির মধ্যে ৩০১টি বাংলাদেশের ‘আবাসিক’ পাখি যেগুলো স্থায়ীভাবে এ দেশে বাস করে।
বাকি ১৭৬টি বাংলাদেশের ‘পরিযায়ী’ পাখি যেগুলো খণ্ডকালের জন্য নিয়মিতভাবে এ দেশে থাকে। এই ১৭৬ প্রজাতির নিয়মিত আগন্তুকের মধ্যে ১৬০টি শীতে এবং ৬টি গ্রীষ্মে বাংলাদেশে থাকে; বাকি ১০টি বসন্তে এদেশে থাকে যাদেরকে ‘পান্থ-পরিযায়ী’ নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
৭৪৪টি পাখির মধ্যে বাকি রইল ১৯৪টি পাখি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লেখক বাংলাদেশে এ সব পাখির অস্তিত্ব থাকতে পারে বললে অনুমান করেছেন, কিন্তু কোন অকাট্য প্রমাণ দেখাতে পারেননি বা পরবর্তীতে এদেরকে এ অঞ্চলে কখনো দেখা যায় নি। এসব পাখিকেও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আজকে আমরা সেই সব পাখি নিয়ে আলোচনা করবো যা আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে দেখতে পাইঃ
দোয়েল পাখি (Birds of Bangladesh):
দোয়েল পাখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতের জনবসতির আশেপাশে দেখতে পাওয়া একটি জনপ্রিয় পাখি। এছাড়াও এর আকার-আকৃতি একে সবার থেকে ভিন্ন ও আলাদা করে রেখেছে। দোয়েল (Birds of Bangladesh) হচ্ছে অস্থির ধরণের পাখি। দোয়েল পাখিকে অস্থির বলার কারণ হচ্ছে এই পাখিটিকে সর্বদা গাছের ডালে বা মাটিতে লাফাতে দেখা যায় খাবারের খোঁজে। এই পাখিটি বাংলাদেশের জাতীয় পাখি। আর এই পাখিটির কলকাকলি খুব ভোরেই শোনাযায়।
কালো তিতির (Birds of Bangladesh):
কালো তিতির বা শেখ ফরিদ বা কালা তিতির এই পাখিটির প্রধান আবাসস্থল হচ্ছে আফগানিস্তান, ইসরাইল, ভুটান, জর্ডান, পাকিস্তান, নেপাল, বাংলাদেশ আরও বিভিন্ন দেশ রয়েছে। বাংলাদেশের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাতাঝরা বন আর রাজশাহী বিভাগের উত্তর প্রান্তের গ্রামঞ্চলে এই পাখিটিকে যায়। এই পাখিটি প্রায় এখন সবদেশ থেকেই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। তাই এই প্রজাতির পাখিটিকে Least Concern বা আশঙ্কাহীন বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই কালো তিতির পাখিকে কালচে বাদামী ভূচর পাখিও বলা হয়ে থাকে। এদের দৈর্ঘ্য কমবেশি ৩৪ সেন্টিমিটার, ওজন ৪৩০ গ্রাম, ডানা ১৫ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ২.৪ সেন্টিমিটার, পা ৪.৮ সেন্টিমিটার ও লেজ ১০ সেন্টিমিটার। (Birds of Bangladesh)
লালবুক কাঠকুড়ালি (Birds of Bangladesh):
এই পাখিটি ভারতের উপমহাদেশে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হিমালয় পর্বতমালায় পাওয়া যায়। এটি বাংলাদেশ (Birds of Bangladesh), ভুটান, কম্বোডিয়া, হংকং, ভারত, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মায়ানমার, নেপাল, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। এই পাখিটি বিশ্বের সব জায়গা থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেলেও এখনো ভারতের মেঘালয় রাজ্যে পাখিটি পাওয়া যায়। লালবুক কাঠকুড়ালি পাখিটি ১৯ থেকে ২৩ সেমি(৭.১থেকে ৯.১ইঞ্চি)। পুরুষ পাখির ঝুটি লাল ও স্ত্রী পাখির কালো। উভয় পাখির ডানা রং কালো ও সাদা।
বড় বসন্ত বৌরি (Birds of Bangladesh):
বাংলাদেশ (Birds of Bangladesh), ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম এবং চীনের দক্ষিণাঞ্চল এই বড় বসন্ত বৌরি পাখিটির প্রধান বিচরণস্থল। এই পাখিটির সারা শরীর কলাপাতা-সবুজ। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম, কেবল কমবয়েসীগুলোর চেহারায় বয়স্কদের লাল-নীলের চাকচিক্য থাকে না। দৈর্ঘ্যে কমবেশি ২৫ সেন্টিমিটার।বড় বসন্ত বৌরির মুখাবয়ব, গলা ও বুকের উপরের দিক দৃষ্টি-আকর্ষী গাঢ় আসমানী নীল- যার জন্য এই প্রজাতিটির ইংরেজি নাম দেয়া হয়েছে Blue-throated Barbet। বড় বসন্ত বৌরি সাধারণত ছোট ছোট দলে একসাথে থাকে। অনেকসময় ৩০-৪০ জনের বড়বড় দলেও থাকতে দেখা যায়।(Birds of Bangladesh)
কাও ধনেশ (Birds of Bangladesh):
কাও ধনেশ পাখি হচ্ছে কাউ ধনেশ বা পাকড়া ধনেশ বিউসেরোটিডি পরিবার বা গোত্রের অন্তর্গত। এটি একটি মোটামুটি বৃহদাকার ধনেশ প্রজাতির পাখি। এই পাখিটির ইংরেজি নাম হচ্ছে Oriental Pied Hornbill বা Indian Pied Hornbill। এই পাখিটির দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৯০ সেন্টিমিটার। এই পাখিটির ডানার পালকের ডগা এবং লেজের বাইরের পালকের আগার দিক সাদা। এই পাখির গলার নিচের পালকহীন নীল চামড়ার পট্টি থাকে। চোখের চারপাশে ও গলায় নীলাভ-সাদা চামড়া দেখা যায়। পা ও পায়ের পাতা স্লেট রঙের সবুজ এবং এই পাখির চোখের তারা লালচে।(Birds of Bangladesh)
আপনি চাইলে আরও পড়তে পারেনঃ বাজরিগার (Bajrika Pakhi) এর খাবার তালিকা
নীলকণ্ঠ পাখি (Birds of Bangladesh):
এই পখিটির পোশাকি নাম হচ্ছে “ইন্ডিয়ান রোলার” আর এদের বিজ্ঞানসম্মত নাম “কোরাসিয়াস বেনঘালেনসিস”। আদরের নাম নীলকণ্ঠ পাখি। ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অংশে এই পাখিদের পাওয়া যায়। মূলত ঘাসজমি ও ঝোপঝাড়ের বাসিন্দা এই পাখি। আকারে ছোট হলেও এই পাখিটি দেখতে বাহারি। বাংলার ঘাসজমিতে এই পাখির একটি প্রজাতিকে দেখে কার্ল লিনেয়াস এর নামকরণ করেছিলেন। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘কর্ভাস বেঙ্গালেনসিস’। ২৬ থেকে ২৭ সেন্টিমিটার লম্বা এই পাখির দেহ, লেজ ও ডানায় উজ্জ্বল নীল রঙের জৌলুস দেখার মতো। ভারতে যে নীলকণ্ঠ পাওয়া যায়, তার গলার কাছের অংশটি কিন্তু হাল্কা বাদামি। বরং, ইউরোপে এই পাখির যে প্রজাতি দেখা যায়, তাদের গলা ও বুকের অংশ নীল।এশিয়ার বিস্তৃত অংশে পাওয়া যায় নীলকণ্ঠ পাখি।(Birds of Bangladesh)
সো ভিউয়ারস আমাদের আজকের ব্লগ পোস্টটি এতুটুকই যদি ব্লগটি ভালো লেগে থাকে এবং এই রকম আরও ব্লগ পোস্ট পড়তে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইট টি ভিসিট করতে পারেনঃhttps://bajrigar.info/
Leave a comment