বাজরিগার পাখি পালন শুরু করার পূর্বে জেনে নিন এই ৮টি বিষয়
বাংলাদেশে বাজরিগার পাখি পালন যে কবে থেকে শুরু হয়েছে তার কোন সুনির্দিষ্ট প্রমান নেই। কিন্তু বন্য যে সকল বাজরিগার পাখি রয়েছে তাদেরকে এই বন্য পরিবেশে বেচে থাকতে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। সেখানে এই পাখি গুলো প্রাকৃতিক উপায়ে নিজেদের দেখাশোনা নিজেরাই করে থাকে।
কিন্তু বাসাতে আমরা যে সকল বাজরিগার পাখির জাত পালন করি তাদের কিন্তু অনেক কিছুরই খেয়াল রাখতে হয় কারন এই পাখি গুল হচ্ছে হাইব্রিড জাতির। হাইব্রিড বলতে বুঝায় যখন কোন জাতির সাথে অন্য কোন জাতির মিলন ঘটিয়ে নতুন কোন জাতি সৃষ্টি বা উদ্ভবন করা হয় তাকে সাধারণত হাইব্রিড বলে।
বাজরিগার পাখি হোক আর যেকোন পাখিই হোক তারা নিজেদের রোগ সহজে বাহিরে প্রকাশ পেতে দেয় না। তাই আমদেরকে এইসকল পাখিদের শরীর এর প্রতি একটু বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। এমন অনেক বিষয় আছে যা আমরা জানিনা কিন্তু ঐবিষয় গুলো আমাদের বাজরিগার পাখিদের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
আজকের এই পোস্টটিতে আমরা এমনকিছু বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করবো যা আমাদের বাজরিগার পাখিদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
পাখি পালনে অধিক তাপমাত্রাঃ
বাংলাদেশের তাপমাত্রা আজকাল অতি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে, তাই আপনার বাজরিগার পাখির ঘরের তাপমাত্রা জানার জন্য আপনি একটি থার্মোমিটার ব্যাবহার করতে পারেন এবং এই থার্মোমিটার টির দাম হতে পারে মাত্র ৬০-৭০ টাকা।
বাংলাদেশের নরমাল তাপমাত্রা অনুযায়ী বাজরিগার পাখি যেখানে রাখবেন সেখান কার তাপমাত্রা সব সময়
২২-৩৫ ডিগ্রী এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন । ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর উপরে তাপমাত্রা উঠে গেলে পাখির নানান ধরনের সমস্যা হতে পারে তার মধ্যেই একটি হল পাখির হিট স্ট্রোক। প্রতি বছর এই হিট স্ট্রোক এর কারনে অনেক পাখির মৃত্যু হয়।
যদি কোন কারণবসত পাখির ঘরের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর উপরে উঠে যায় তবে সেই সময় পাখির গায়ে এবং পাখির খাঁচাতে একটু পানি স্প্রে করে দিতে হবে।আবার বেশি পানি স্প্রে করলে পাখির ঠাণ্ডাও লাগতে পারে এই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তারপর আপনি চাইলে পাখিকে ৩দিন পরপর ও টিমসেন স্প্রে করতে পারেন।
পাখি পালনে অতিরিক্ত ঠান্ডাঃ
বাজরিগার পাখির খাঁচার তাপমাত্রা থাকতে হবে ১৮ ডিগ্রী এর উপরে নয়তো, পাখির শরীরের উপরে তা খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। আপনি যদি আপনার পাখিকে ঘরে পালন করে থাকেন তবে খাচাগুলোকে এমন ভাবে রাখতে হবে যাতে করে পাখিদের শরীরে সরাসরি ফ্যান বা এসির বাতাস না লাগে এবং শীতকালে পাখির খাচাগুলোকে মোটা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
বিষাক্ত ধোয়াঃ
বাজরীগার এর শ্বাস-প্রশ্বাস এর প্রক্রিয়া অত্যন্ত সংবেদনশীল ও নমনীয়। এমন অনেক জিনিস আছে যা হয়তো আমাদের শরীর এর জন্য ক্ষতিকারক নয় কিন্তু সেই সব জিনিসগুলো আমাদের প্রান প্রিয় পাখিদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকারক।
যেমনঃ সুবাসিত মোমবাতি, মশা মারার স্প্রে, বডি স্প্রে, এয়ার ফ্রেশনার এই সকল জিনিস গুলোতে অধিক পরিমানে ক্যামিক্যাল ব্যাবহার করা হয়, তাই এই সকল জিনিস-প্ত্র গুলোকে পাখিদের থেকে যথা সম্ভব দূরে রাখা উচিত।
বাংলাদেশে হয়তো এই সকল জিনিস গুলোর জন্য পাখিদের এখনও তেমন কোন দূর্ঘটনায় পড়তে হয়নি কিন্তু বিদেশে এমন অনেক ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়।
শুকনো নেইল পালিস বা শুকনো রঙঃ
বাজরিগার পাখি যখন যা সামনে পায় তা একবার হলেও চিবিয়ে খেয়ে টেস্ট করতে চায়। কিন্তু এতে করে পাখিদের অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই যতটা সম্ভব পাখিদের থেকে শুকনোনেইল পালিস বা শুকনো রং দূরে রাখতে হবে।
সিগারেট এর ধোঁয়াঃ
আমদের মধ্যে অনেকেই ধূমপান করে থাকে। সিগারেটের ধুয়া যেভাবে আমাদের নিজেদের ক্ষতি করে ঠিক একই ভাবে ক্ষতি করে আমাদের আশেপাশে যারা থাকে তাদেরও। এই সিগারেটের ধুয়া যে খালি মানুষ এর জন্য ক্ষতিকর তা কিন্তু না এটি আমদের পাখিদের জন্যও অনেক ক্ষতিকারক। আমরা অনেকেই সিগারেট হাতে নিয়ে পাখির হাটে ধোঁয়া ছাড়ি আর পাখি দেখি। এটি কিন্তু মটেও ঠিক নয়।
নন স্টিকঃ
সসপ্যান, হিটার, নন স্টিক এর পাতিল, তাওয়া , করাই ইত্যাদিতে রান্না করার সময় এই জিনিস গুলো থেকে যে ধুয়া উৎপন্ন হয় তাও আমদের পাখির জন্য অনেক ক্ষতিকারক। তাই রান্না বান্নার সময় পাখিদের কে রান্না ঘর থেকে দূরে রাখতে হবে।
কোমল পানীয়ঃ
বাজরিগার এর পাশে কোন এ্যালকোহল, কফি, ক্যাফেইন বা সোডা কিছুই রাখা যাবে না। এই জিনিসগুলো পাখিদের হৃৎপিণ্ডে অনেক খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
পাখি পালনে এগ ফুডে লবন বা চিনি এর ব্যাবহারঃ
এগ ফুডে বা আমাদের পাখিদের জন্য তৈরী করা যে কোনো খাবারেই লবন বা চিনি ব্যাবহার করা উচিত নয়। আমরা যে সকল সবজি দিয়ে এগ ফুড তৈরী করি তাতে যে পরিমাণে লবন বা চিনি থাকে এর বাইরে পাখিদের শরীরে আর কোন বাড়তি লবন বা চিনি এর প্রয়োজন পড়ে না। তাই পাখিদেরকে যে কোন খাবার দেয়ার সময়ই কোন ধরনের লবন বা চিনি অ্যাড করার দরকার নেই। বাজরিগারদের যদি আপনি ফল দিতে চান তাহলে
তা খুবই পরিমিত পরিমাণে দিন।
আমাদের অন্যান্য ব্লগ গুলো পরতে কিল্ক করুণ
পাখির বেপারে আরও বিস্তারিত জানতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ভিসিট করতে পারেন
Leave a comment